দিন কয়েক আগে মৃদুল আমাদের বাসায় এসেছিল। অনেক বছর বাদে ওর সাথে দেখা। আমরা কাগজে কলমে পাশাপাশি দুই গ্রামের মানুষ হলেও কার্যত ছিলাম এক বাড়ির মানুষের মতই। ওদের ধানি জমির পাশে ছিল আমাদের জমি। আমাদের আনারস কাঁঠালের বাগানের সাথে ওদের বাগান। আবার প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে এসএসসি পর্যন্ত আমরা একই সাথে স্কুলে লেখাপড়া করেছি। কাজেই নানা বাঁধনে জড়িয়ে আমাদের যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তার বুনিয়াদ একেবারে শিলা খন্ডের মত অটুট।
আমি স্নাতক পড়ার সময় গ্রাম ছেড়েছিলাম। তারপর আস্তে আস্তে গ্রামের পাট চুকিয়ে বুকিয়ে শহরতলীতে একেবারে স্থায়ী ডেরা গেঁড়ে বসলাম। মৃদুল এসএসসিটা শেষ করে চলে গিয়েছিল ভারতে ওর মাসির বাড়িতে। তারপর ওখান থেকে কীভাবে কীভাবে যেন জার্মানীতে। ওখানে ওর কর্মজীবনের শুরুটা নাকি অবর্ণনীয় কষ্টের হলেও এখন কাটছে খুব সুখে। এখন বার্লিনে ওর তিন তিনটা ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর আছে। তাতে পঁচিশ ত্রিশ জন জার্মান লোকও নাকি কাজ করে। শুনে আমি খুবই অবাক আর খুশি হয়েছি।
জেলা শহরে মৃদুল বাড়ি গাড়ি অনেক কিছু করেছে। গ্রামের বাড়িঘরও খোলনলচে পাল্টে একেবারে সবকিছু বদলে ফেলেছে। ওকে গ্রামের পাট চুকাতে হয়নি। বরং জমিজমার পরিমাণ আরও বেড়েছে। শহরতলীতে ছোট্ট একটা আস্তানা গাঁড়তে আমার বাড়িঘর জমিজমা সব হাত ছাড়া করার মধ্য দিয়ে গ্রামের সাথে সম্পর্কটা একেবারেই ছিন্ন করেছি কথাটা আমিও একসময় ভাবতাম। সময় যত গড়িয়ে যাচ্ছে ব্যাপারটা আমার কাছে ক্রমেই ভূল হয়ে ধরা দিচ্ছে। শৈশব, কৈশোর আর প্রাকযৌবনের লীলাক্ষেত্র আমার গ্রাম আমার অন্তরে সবসময়ই দূর আকাশের নক্ষত্রের মতই অবিরাম একইভাবে একইরকম আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে। দূরে সরে যাওয়ায় সম্পর্কটা, প্রেমটা অন্যরূপ অন্যমাত্রা পেয়েছে।
সেদিন মৃদুলকে দেখে আমি ভূত দেখার মত চমকে উঠে অনেক হৈচৈ করেছিলাম। স্ত্রী ছেলেমেয়েদেরকে ডাকতে হয়নি। আমার চিৎকার চেঁচামেচিতে ওরাই বসার ঘরে ছুটে এসেছিল। ওদের চেহারার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরেছিলাম যে খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি। যেই কৈশোর থেকে আমাদের আর দেখা সাক্ষাত নেই আমি আমার বয়সটা ভূলে কিছু সময়ের জন্য সেই কৈশোরেই যেন ফিরে গিয়েছিলাম।
আমার উচ্ছ্বাসে ভাটা পড়েছিল মৃদুলের সাথে আমার ছেলেমেয়েদের পরিচয় পর্ব, কুশল বিনিময় করার দৃশ্যটা দেখে। যদিও মৃদুল বুঝতে পারেনি, কেউই পারে না। আমার ছেলেমেয়েরা দু’জনই এখনও কিশোর বয়সের। লেখাপড়া করছে। কিন্তু ওরা অপরিচিত বা আত্মীয়স্বজন কারো সাথে খুব একটা স্বাভাবিকভাবে মিশতে পারে না। আমি আর ওদের মা ছাড়া যাদের সাথে ওদের দেখা সাক্ষাত হয় কথা হয় সবকিছুতে কেমন জানি আন্তরিকতার খুব অভাব থাকে। ওরা যেন চাপা অস্বস্তিতে মানুষের সঙ্গ ত্যাগের জন্য ভিতরে ভিতরে ছটফট করে মরে।
ছেলেমেয়ের এই বিষয়টা নিয়ে ভেবে আমার খুব দুশ্চিন্তা হয়, ভয়ও হয়। লোক-লৌকিকতা, সামাজিকতা এমনকি ভবিষ্যতে ওদের পেশার কথা ভেবে ভেবে আমি মর্মাহত হই। ওদেরকে অনেক বুঝাই। ওদেরকে বলি সবার সুখে দুঃখে একাত্ম হতে না পারলে মানুষের জীবন পরিপূর্ণতা পায় না।
মৃদুল অনেকটা সময় আমাদের বাসায় থাকল। আমাদের দু’বন্ধুতে কথা হল। অনেক কথা। অনেক অনেক দিন, বছর মনে জমে থাকা নানান কথা। যাওয়ার আগে ও আর একদিন আমাদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলল। কোথায় যেতে চায় জানতে চাইলে ও জানাল গ্রামের বাড়ি যাবে। অনেকদিন যাওয়া হয় না তাই আমি ওর কথায় সায় দিয়ে একটা তারিখও ঠিক করে ফেললাম।
গ্রামে গেলাম। আমার ছেলেমেয়েকে নিতে পারলাম না। বলল পরীক্ষার পড়ার খুব চাপ। ওরা এরকমই করে কোথাও যেতে চায় না। ভাবা যায় না ভ্রমণেও ওরা কোন আনন্দ খুঁজে পায় না। কোথাও নিয়ে যেতে চাইলেই নানা বাহানা বানায়। যাহোক ছেলেমেয়ে গেল না তাই ওদের মাও গেল না। মৃদুলের বৌ বাচ্চাও যায়নি। ওরা কলকাতায় গেছে। মাসির বাড়িতে থাকার সময় মৃদুল কলকাতার মেয়ের প্রেমে পড়েছিল। পরে সেই মেয়েকেই বিয়ে করেছে। মৃদুলের একটা মাত্র মেয়ে ওর বৌ তাকে নিয়ে বাপের বাড়ি বেড়াতে গেছে কলকাতার বেহালায়।
গ্রামে গিয়ে নিজের চেনা সেই গ্রাম খুঁজে পেলাম না। সেই ফুল ফল লতা গুল্ম গাছপালা কিছুই তেমন নেই। লাবণ্যহীন জরাক্রান্ত গ্রাম দেখে মনটা কেমন করে উঠল। আমাদের গ্রামের পুকুর পাড়ের বকুল গাছটা নেই ওদের বিলের ধারের গাব গাছটা। ভোরের আলো ফুঁটে ওঠার আগেই এই বকুল গাছের ফুল কুঁড়ানো শেষ হত। গাব গাছটা ছিল আকৃতিতে একেবারে আকাশ ছোঁয়া একটা প্রকান্ড দেবদারু গাছের মত দেখতে। বৈশাখের দিকে তাতে গাব পেঁকে হলুদ হয়ে থাকত, পাঁকা গাবের গঁন্ধে চারিদিক মৌ মৌ করত। ভরা বর্ষায় এই গাব গাছটার চূঁড়ায় উঠে আমরা বিলের পানিতে লাঁফিয়ে পড়তাম। চিৎকার করে গান গাইতাম।
মৃদুলদের বাড়ির তিন দিক ঘিরেই ছিল বিল। সেই বিলের ধার ঘেষে ছিল সারি সারি হিজল গাছ। গ্রীষ্মের শুরুতে যখন ওসব গাছের ফুল ঝরে পড়ত তখন যে সৌন্দর্যটুকু চোখ জুড়াত তার কাছে লাল গালিচাও একেবারেই শ্রীহীন। এইসব হিজলতলায়ও আমাদের বাল্য কৈশোরের কত সময় যে কেটেছে তার হিসেব একমাত্র উপরওয়ালাই জানেন।
জৈষ্ঠ্য আষাঢ়েই বিল স্বচ্ছ জলে ভরে উঠত। ঘরে ঘরে পাকা আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, আনারসে স্তুপ। আমনধানের কঁচিপাতা বিলের পানিতে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকত। কৈ মাছ লাফিয়ে উঠে ধান গাছের সবুজ পাতায় বসে থাকা কীট পতঙ্গ মুখে পুরেই আবার টুপ্ করে তলিয়ে যেত। ওসব আর কিছু অবশিষ্ট নেই।
পাল খাটানো ছৈয়ার নৌকায় করে মেহমান এসে বাড়ি ঘর ভরে যেত। হাসি আনন্দে গানে বাড়িঘরে যেন মেলার আমেজ চলত। আমরা কবে এইসব মেহমানরা আসবে তার জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুনতাম। আগাম খবর পেয়ে বার বার বিলের ধারে, পথের ধারে ছুটে যেতাম মেহমানদের ঘরে এগিয়ে আনতে। অভাবের সংসারেও মেহমান ছিল প্রত্যাশিত, কাঙ্খিত।
আমি আর মৃদুল একবার স্কুল পালিয়ে সিনেমায় দেখতে গিয়েছিলাম। পরের দিন ক্লাসে ঢুকেই হেড স্যার আমাদের দু’জনকে দাঁড় করিয়ে রাখলেন। নাম ডাকা শেষ করে আগের দিন আমাদের দু’জনের স্কুলে না আসার কারণ জানতে চাইলেন। বুঝতে পারলাম উপায় নেই। মাথা নীচু করে স্কুল পালিয়ে সিনেমা দেখার কথা স্যারকে বলে দিলাম।
স্যার চোখ আগুন লাল করে বেত মোঁচড়াতে মোঁচড়াতে দাঁতমুখ খিঁচিয়ে সিনেমার নাম জানতে চাইলেন। ক্লাস ভরা সহপাঠীদের সামনে লজ্জায় মাথা হেঁট করে কোন মতে বললাম- নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা।
স্যার হাতের বেত টেবিলে রেখে দিলেন। চেয়ার টেনে বসতে বসতে চোখ পাঁকিয়ে স্যার আমাদের দুজনকে তাঁর সাথে টিফিনের সময় দেখা করতে বললেন।
সহপাঠীদের হাসি তামাশার মধ্য দিয়ে আমরা দু’জন রাজ্যের ভয় মাথায় নিয়ে স্যারের রুমে গেলাম। স্যার চেয়ার থেকে উঠে দু’জনের কান ম’লে দিয়ে হাসতে হাসতে পাঞ্জাবীর পকেট থেকে পাঁচ টাকার একটা নোট বের করে দিলেন। অবাক বিস্ময়ে স্যারের হাত থেকে টাকাটা নিয়ে আমরা দু’জন স্কুলের পাশের একমাত্র নিমকির দোকানের দিকে দিলাম ভোঁ দৌঁড়!
আমাদের তিরস্কারের বদলে পুরস্কার পাওয়ার কথাটা স্কুল জুড়ে চাউর হতে বেশি সময় লাগে নি। সব ছাত্রছাত্রীরা খুব হৈচৈ জুড়ে দিল। সপ্তাহের শেষ দিন দেখা গেল স্কুলের মাঠে কয়েকটা বাস দাঁড়িয়ে আছে। সব ছাত্রছাত্রী, স্যার, দফতরি কেরানি বাসে চেপে বসল সিনেমা হলের উদ্দেশ্যে। আমি আর মৃদুল দ্বিতীয়বারের মত দেখলাম- নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা।
এসব কথা ভাবতে ভাবতেই দিনটা যেন এক নিঃশ্বাসে ফুরিয়ে গেল। বিকেলে বাসায় ফিরব বলে যখন গ্রামের শেষ প্রান্তে বের হয়ে এসেছি তখন দেখলাম প্রায় দশ বারো বছরের একটা ছেলের হাতে একটা কৌটা। সে কিছুক্ষণ পর পর ওটা কানে ঠেকিয়ে কিছু শোনার চেষ্টা করছে। আমার খুব কৌতুহল হল। জিজ্ঞ্যেস করে জানলাম তাতে একটা ভ্রমর আছে। আমি হুমড়ি খেয়ে গিয়ে যেন ওর উপর পড়লাম। এক প্রকার ছোঁ মেরেই ছেলেটার হাত থেকে কৌটোটা কেড়ে নিলাম।
ছোটবেলা আমাদের গ্রামের আনারস বাগানের কড়ই গাছগুলিতে দেখা যেত। কড়ইয়ের কঁচিপাতা ভ্রমরের খুব পছন্দ। আজকাল আর ভ্রমর দেখা যায় না। অপরূপ সৌন্দর্যের এই পতঙ্গ আজকাল চোখেই পড়ে না। আমি আমার ছেলেমেয়েকে দেখাব বলে ইন্টারনেটে ইমেজ সার্চ দিয়েও অনেকদিন চেষ্টা করেছি তাতে ভ্রমরের কোন ছবি পাই নি। যা পেয়েছি তার একটাও ভ্রমর না, আজে বাজে সব পোঁকা মাকড়ের ছবি।
ঐ ছেলেটার মত করে কৌটোটা কানের কাছে আমিও তুলে ধরলাম। স্পষ্ট শুনতে পেলাম ভিতরে ভ্রমরটা গুমরে গুমরে কাঁদছে। ওটা মরে যাবে ভেবে আমি ব্যাকূল হয়ে ছেলেটার হাতে একশ টাকার একটা নোট গুঁজে দিয়ে ভ্রমরটা আমাকে দিয়ে দিতে বললাম। ছেলেটা কিছুক্ষণ নতুন নোটটার দিকে তাঁকিয়ে থেকে মাথা দুলিয়ে আমার কথায় সম্মতি জানাল।
আমি সাথে সাথেই কৌটোটার ঢাকনাটা খুলে সাবধানে ভ্রমরটা হাতে তুলে নিলাম। ময়ূরপুচ্ছ রঙের অপরূপ একটা ভ্রমর অনেক বছর পর দেখতে পেয়ে আমার আনন্দের সীমা রইল না। মৃদুলও ভ্রমরটা দেখল। তারপর আমি ওটা বাতাসে উড়িয়ে দিলাম। গুঞ্জন তুলে ওটা আকাশের দিকে উড়ে গেল।
গাড়ীতে বসলাম। ছেলেমেয়ের কথা মনে পড়ল। কখন অপহরণের শিকার হয়, কার না কার সাথে মেলামেশা করে ওরা খারাপ হয়ে যায় এসব করে করে আমরা ওদেরকে একেবারে কৌটোবন্দী ভ্রমরের মত করে ফেলেছি। হিজলফুল, গাবগাছ, বিলের পানি, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা না পেয়ে পেয়ে ওরা এখন আর কিছুই চায় না। ওদের হয়ত কিছুই ভাল লাগে না। কাউকে না, আমাকেও না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তানি হক
ভাইয়া কিজে ভালো লাগলো টল্পটি বলে বোঝানো যাবেনা । গল্পের শেষে এসে ভ্রমরের কথার ছলে কি কথা বললেন বুকটা কেমন করে উঠলো । হ্যা ভাইয়া আমাদের জীবন টা সেই আগের মত নেই ... এখন সব কিছুই কেমন যেন প্রাণহীন নিরেট তা হোক কৈশোর হোক শৈশব । আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ অসাধারণ এই গল্পটির জন্য। ভোট দিতে গিয়ে ব্যাথিত হলাম । :( ভালো থাকুন ভাইয়া । প্রিয় তে রাখলাম গল্পটি
এস, এম, ইমদাদুল ইসলাম
আহারে !! ভাই, আপনার গল্প পড়ে আমার মামাবাড়ির সেই গাবগাছটার হলুদ পাকা গাব চোখে ভেসে উঠল । মনে হয় যেন আজো ঠোটের সাথে লেপটে রয়েছে । আর এটাতো সত্যিই বাসতব ভোমরটাকে উড়িয়ে দিতে পারি বটে, কিন্তু আমাদের কেৌটায় আটকানো সন্তানদের সে কেৌটা থেকে বের করার সাহস কারোরই হয় না । এ যে কত কষ্টের !!! আপনার গল্পটা দারুণভাবে উপভোগ করলাম ।
ফেরদৌসী বেগম (শিল্পী )
সত্যিকারের এবং বাস্তব কৈশোরের ছবিগুলো আপনার গল্পে সাবলীলভাবে তুলে ধরেছেন ভাই, যা কখনই ফিরে পাবার নয়। অসম্ভব ভালোলাগা আর শুভকামনা রইলো।
মোঃ মহিউদ্দীন সান্তু
অতীত ও বর্তমানকে পাশাপাশি এনে দারুন লিখেছেন, এখনকার ছেলে মেয়েরা কৌটোবন্দী ভ্রমরের মত সত্যিই গল্পের শেষে একটি চরম বাস্তব কথা বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ চমৎকার গল্পটির জন্য। ভালো থাকবেন।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।